সভ্যতা ও আদর্শ বিনির্মাণে শিক্ষার গুরুত্ব:
মানবজীবনে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যক্তি গঠন, সমাজ বিনির্মাণ ও আদর্শ জাতি তৈরি সহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। মানুষের মৌলিক প্রয়োজনের অন্যতম হলো “শিক্ষা”। এটাই পার্থিব জীবনের উন্নতি ও সফলতার চাবিকাঠি। শুধু এতটুকই নয়, বরং আখেরাতের কল্যাণ অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ সিঁড়িও হচ্ছে শিক্ষা। সুতরাং বলাই বাহুল্য যে, পার্থিব উন্নতির জন্য যেমন শিক্ষার প্রয়োজন, ঠিক তেমনিভাবে আখেরাতের সফলতার জন্যেও শিক্ষার প্রয়োজন আরো বেশি। শিক্ষা ব্যতিত কোন জাতি এগিয়ে যেতে পারে না, কোন ব্যক্তি লক্ষ্য অর্জন করতে পারে না। তাই উক্ত বিষয়টি কুরআন-সুন্নাহে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন:-
আচ্ছা বলুন তো,
যারা জানে আর যারা জানে না তারা উভয়ই কি সমান হতে পারে? (সূরা যুমার- ৯)
সফলতার এই পাথেয়টি অর্জনের জন্য কোন নিষেধাজ্ঞা নেই, বরং একটা পর্যায় পর্যন্ত তা অর্জন করা অত্যন্ত জরুরি। তবে হ্যাঁ, এজন্য রয়েছে আবশ্যকীয় নির্দেশনা। আর আমরা যেহেতু মুসলিম, তাই অন্যান্য বিষয়ের মতো এখানেও অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ের প্রতি আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, তাহলে আমাদের শিক্ষার্জন হবে কল্যাণকর, অন্যথায় দুনিয়া-আখেরাত উভয়টি ধ্বংস হয়ে যাবে!
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার পক্ষ থেকে শিক্ষা অর্জনের একটি মূলনীতি দেয়া হয়েছে। যা পবিত্র কুরআনে এভাবে বর্ণিত হয়েছে:-
পড়ো তোমার রবে'র নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। -সূরা আলাক : ১
এই আয়াতের শিক্ষা ও দাবি এটাই যে, যে কোন ধরনের শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদেরকে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে যে, সেই শিক্ষা অর্জনে আল্লাহর অনুমতি আছে কিনা? আমাদের একমাত্র পরিচয় “মুসলিম”। এই পরিচয়ের সাথে শিক্ষার বিষয়বস্তু সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা? আল্লাহর পক্ষ থেকে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত একমাত্র দ্বীন “ইসলাম” এর আদর্শের সাথে কোন ধরনের সাংঘর্ষিকতা ও বৈপরীত্য আছে কিনা? যদি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর ইতিবাচক হয়, তাহলে তা গ্রহণ করা আর যদি উত্তরের কোন একটা দিক নেতিবাচক হয়, তাহলে সেটা সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা আমাদের ঈমানের দাবি, সততার পরিচয়, আল্লাহকে রব বলে বিশ্বাস করার প্রামাণ্য আচরণ।
অতএব হে ইসলাম প্রিয় অভিভাবকগণ! আপনারা জাগ্রত হোন সমাজের অবক্ষয় ও মহামারীর বিষয়ে, সচেতন হোন নিজেদের সন্তানদের ভবিষ্যতের বিষয়ে এবং উদ্যোগী হোন আপনাদের পবিত্র স্বপ্ন ও সম্পদগুলো সংরক্ষণের জন্য। সন্তানদেরকে বিকৃত শিক্ষাব্যাবস্থার বিষাক্ত থাবা থেকে উদ্ধার করুন। নীতি-নৈতিকতা ও সুস্থ চিন্তা-চেতনার দিকে ধাবিত করে এমন সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলুন। অনেক বিলম্ব হয়েছে, সময় শেষ হয়ে আসছে, সুযোগ ফুরিয়ে যাচ্ছে! তাই সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখনই সময়।